বাংলাদেশে শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহের অবদান সর্বাধিক। প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে শহর থেকে গ্রাম, গ্রাম থেকে দুর্গম অঞ্চলে প্রতিষ্ঠা লাভ করে এ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব পালন করছে শিক্ষার আলোকবর্তিকা দেশের আপামর জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে। উদ্দেশ্য, চিন্তা, ভাবনা একটিই আর তা হচ্ছে দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়া। আর সেই লক্ষ্যে পৌঁছার জন্যে প্রয়োজন জাতিকে শিক্ষিত করে তোলা।
যুগের সাথে তাল রেখে বর্তমানে শিক্ষা ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। পৃথিবী এখন সময়ের হিসেবে একবিংশ শতাব্দীতে। বলতে গেলে বর্তমান পৃথিবীর একমাত্র বাহন হয়ে দাঁড়িয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি। এ প্রযুক্তির পেছনের সব নেতিবাচক অবস্থাকে ডিঙ্গিয়ে এত দ্রæতগতিতে এগিয়ে চলেছে যে তার সাথে তাল রাখা বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে কষ্টসাধ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তথাপি বিশ্বের অগ্রগতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এ পরিবর্তনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এগিয়ে চলছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ।
শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো মানবতার বিকাশ এবং জনমুখী উন্নয়ন ও প্রগতিতে নেতৃত্বদানের উপযোগী মননশীল, যুক্তিবাদী, নীতিবান, নিজের এবং অন্যান্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কুসংস্কারমুক্ত, পরমতসহিষ্ণু, অসাম্প্রদায়িক, দেশপ্রেমিক এবং কর্মকুশল নাগরিক গড়ে তোলা।
২০০৫ সালে দি রয়েল এম. সি.একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে আমার প্রথম থেকেই লক্ষ্য ছিল মানসম্মত শিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে অগ্রসরমান জাতিকে আরও এগিয়ে নেওয়া। এই ইচ্ছে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন এবং বাংলাদেশ কারিগরি বোর্ড, ঢাকা থেকে পাঠদানের অনুমতি পেয়ে ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা (Business Management) বিষয়ে শিক্ষাদানের মাধ্যমে দি রয়েল এম. সি. একাডেমি–এর যাত্রা শুরু হয়।
সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে কলেজ প্রতিষ্ঠার এক যুগ পরে কলেজটি আজ স্বমহিমায় উদ্ভাসিত।
কারিগরি শিক্ষায় আশাতীত সাফল্যের পর সাধারণ শিক্ষায় পাঠদানের জন্য সিলেট শিক্ষা বোর্ডে পাঠদানের অনুমতি প্রার্থনা করা হয়। এর প্রেক্ষিতে ২০১০ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, সিলেট থেকে মানবিক, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে পাঠদানের প্রাথমিক অনুমতি পায় কলেজটি।
পাবলিক পরীক্ষায় উভয় বোর্ডে এই কলেজের শিক্ষার্থীরা আশাব্যঞ্জক ফলাফল করছে। নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষকমন্ডলীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে শত ভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে বেশ কয়েক বছরের পরীক্ষায়।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ভিশন ২০২১–এর লক্ষ্যার্জনে দি রয়েল এম. সি. একাডেমি ডিজিটেলাইজেশনের উদ্যোগের অংশ হিসেবে ডাইনামিক ওয়েবসাইট–এর মাধ্যমে প্রযুক্তিগতভাবে দেশের ও বিশ্বের সাথে যুক্ত হলো।
শিক্ষিত জাতি বিনির্মাণে এই কলেজের পরিচালনা কমিটি, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীসহ সমাজের বিভিন্ন পেশার নাগরিকদের সুচিন্তিত মতামত এবং প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ বিশেষ অবদান রাখবে বলে আমি প্রত্যাশা করি।
২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ২০২৩ পর্যন্ত ১৯ বছর অতিক্রম করল দি রয়েল এম. সি.একাডেমি। এক যুগ দীর্ঘ সময়। এই সময়ের মধ্যে কলেজটি নানা চড়াই–উৎরাই পেরিয়ে সফলতার ধারা টিকিয়ে রেখেছে।
কলেজ পরিচালনা কমিটির প্রথম সফলতা আসে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা থেকে ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পাঠদানের অনুমতি পেয়ে। অভিজ্ঞ ও প্রশাসনিক কাজে দক্ষ পরিচালনা কমিটির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও তদারকিতে যাত্রা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্টা এবং সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দের পরিশ্রম আর আন্তরিকতায় সফলতার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চলেছে কলেজটি।
২০১০ সালে কলেজ পরিচালনা কমিটির আরেকটি প্রশাসনিক সফলতা আসে সাধারণ শিক্ষায় (মানবিক, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা শাখা) মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, সিলেট–এর অধীনে পাঠদানের অনুমতি লাভের মাধ্যমে ।
কারিগরি বোর্ড ও সিলেট শিক্ষা বোর্ডেও পাবলিক পরীক্ষা গুলোর ফলাফল পর্যালোচনা করলে এই কলেজের শিক্ষার্থীদের ফলাফল ঈর্ষণীয়। এই ফলাফলের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে কলেজ পরিচালনা কমিটিসহ শিক্ষক,কর্মকর্তা,কর্মচারীবৃন্দ বদ্ধ পরিকর।
উল্লেখ্য যে, পরিচালনা কমিটির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কলেজটি ২০১০ সালে প্রয়োজনীয় শর্তাদি পূরণ সাপেক্ষে এমপিওভুক্ত হয়। এতে করে কলেজের সার্বিক অবস্থার ওপর ও ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। ঐ বছরই এমপিওভুক্ত কলেজ হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল কর্তৃক কলেজে কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠিত হয়। ল্যাবের মাধ্যমে (ICT) শিক্ষাসহ কম্পিউটার সম্পর্কিত শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।
বর্তমানযুগ প্রযুক্তির যুগ। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রূপকল্প–২০২১ সার্থক করার জন্য প্রযুক্তি জ্ঞানে সবাইকে দক্ষ করার লক্ষ্যে দি রয়েল এম. সি.একাডেমি উদ্যোগ নিয়েছে। এরই পদক্ষেপ হিসেবে নিজস্ব ওয়েব সাইট–এর মাধ্যমে বিশ্ব সংযুক্তি নিশ্চিত করেছে এবং ক্যাম্পাসকে ওয়াই–ফাই জোনের আওতায় নিয়ে এসেছে। নিজস্ব ল্যাবকে আরও সমৃদ্ধশালী করার জন্য পরিচালনা কমিটিও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
দি রয়েল এম. সি. একাডেমি দেশ গড়ারকাজে যোগ্য ও দক্ষ নাগরিক তৈরির একটি পরিপূর্ণ শিক্ষায়তন হিসেবে দায়িত্ব পালন করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছে।
আমাদের কলেজের দর্শনে আমরা বিশ্বাস রাখি এবং তা ধারণকরি।
First Deserve Then Desire…
Commitment to Excellence!
এ কলেজের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে সুপরিকল্পিত পাঠ্যক্রম, সহ-পাঠ্যক্রম কর্মসূচির যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক গুণাবলির সর্বোচ্চ উৎকর্ষ সাধন, যাতে তারা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এবং ভবিষ্যতে দেশ ও জাতিকে উপযুক্ত নেতৃত্ব দিতে পারে।